দখিনের খবর ডেক্স ॥ ব্যবসা পরিচালনার জন্য ঋণের সুদ নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না বলে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগবেন না। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ ও সংকট মোকাবিলার কার্যক্রম সমন্বয়ে সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে রাজশাহী বিভাগের জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়কালে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা ইতোমধ্যে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেছেন কিন্তু এই করোনা ভাইরাসের কারণে এই ক’মাস সবকিছু বন্ধ থাকায় ঋণের সুদ বেড়ে গেছে, সেটার জন্য আপনারা চিন্তা করবেন না। কারণ সেই সুদ এখনই নেওয়ার কথা না।
সুদ কতটুকু মাফ করা যায় বা কতটুকু নিয়মিত করা যায় এটি সরকারের বিবেচনায় আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বসবো। কাজেই এই সুদগুলো যাতে স্থগিত থাকে, পরবর্তী সময়ে কতটুকু মাফ করা যায়, কতটুকু আপনারা নিয়মিত দিতে পারেন সেটা বিবেচনা করা হবে। কাজেই সেদিকে দুঃশ্চিন্তায় ভুগবেন না।
বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনা ঘোষণার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একবারে ক্ষুদ্র ব্যবসা থেকে শুরু করে- যেমন মৎস্যচাষি থেকে শুরু করে পোল্ট্রি, ডেইরি ও কৃষিকাজ যারা করেন, বা বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো ব্যবসা বা ক্ষুদ্র ব্যবসা যারা করেন, প্রত্যেকের কথা চিন্তা-ভাবনা করে এবং অন্য দিকে খেয়াল রেখে আমরা প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি প্রণোদনা ঘোষণা দিয়েছি এবং সেটা বিভিন্ন ভাগে ভাগে। ‘যাদের ছোট খাট ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মাত্র ২ শতাংশ সুদে আমরা টাকা দিয়ে দিচ্ছি। ব্যবসাগুলো যাতে চালু রাখতে পারেন সে বিষয়টি আমরা দেখবো।
করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব যেসব এলাকায় কম সেখানে ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল করার ইঙ্গিত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে সবচেয়ে বড় কথা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা। আমাদের জীবন-জীবিকার পথটা উন্মুক্ত রাখা। যে সব জায়গায় করোনা ভাইরাস এখনো দেখা দেয়নি, সে সব জায়গায় আমরা শিথিল করে দিচ্ছি। মানুষ যাতে স্বাভাবিক জীবনযাপনটা করতে পারে বা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে। সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিচ্ছি। খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বিশ্বব্যাপী কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে। এমনকি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এটাও বলছে সারা বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষ মহামারি দেখা দিতে পারে।
‘বাংলাদেশ আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর। আমাদের যাতে কোনো খাদ্যের অসুবিধা না হয়- কাজেই যেখানে যে ফসলটা হবে, ধানকাটার পরপর সেখানে কোন ফসলটা ফলাতে পারি। কেউ যেন এতটুকু জমিও ফেলে না রাখে। এক খন্ড জমিও যেন বাদ না যায়। তরিতরকারি, ফলমূল যা হোক সব কিছু যেন উৎপাদন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘বাড়ির আঙিনায় যেখানেই পারেন এগুলো আপনারা চাষ করবেন। যেন এই মহামারি দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে- করোনা মহামারির পর যে দুর্ভিক্ষ মহামারি সারা বিশ্বব্যাপী দেখা দেবে সেখান থেকে যেন আমাদের দেশকে আমরা বাঁচাতে পারি। তার জন্য প্রত্যেকে নিজেরা উদ্যোক্তা হয়ে উৎপাদন করুন। ‘আরও ফসল ফলাতে হবে, আমরা নিজেরা যেমন খেতে পারবো অন্য দেশে অভুক্ত মানুষ থাকলে তাদেরও সাহায্য করতে পারবো। সেই মানসিকতা নিয়ে কাজ করবেন।
দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পোল্ট্রি, ডেইরি যারা করছেন, এই যে দুধ আমি জানি যেহেতু দোকান-পাট, হোটেল সব বন্ধ আপনারা অল্প টাকায় সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। সবাই খেতে থাকুক। বা দুধ দিয়ে ঘি বা অন্য যা যা দরকার তৈরি করে রাখুন যেটা বহুদিন টিকে থাকবে। ফেলে না দিয়ে কাজে লাগানো বা মানুষকে বিলিয়ে দিলেও তো কাজে লাগে। অনেকে দিচ্ছেন সে জন্য ধন্যবাদ।
Leave a Reply